হামাস ও হিজবুল্লাহ ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। সোমবার ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে এই দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর একাধিক আক্রমণ হয়, যার ফলে দেশব্যাপী সতর্কতা সংকেত বেজে ওঠে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ও লেবাননে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। এই আক্রমণে সর্বশেষ পঞ্চাশজনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
হিজবুল্লাহ দাবি করেছে, তারা ইসরায়েলের তৃতীয় বৃহত্তম শহর হাইফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে এবং বিকেলেও আরও একবার আক্রমণ করে। এছাড়া, হিজবুল্লাহ ড্রোন হামলার মাধ্যমে উত্তর ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনাগুলোকে টার্গেট করেছে।
হিজবুল্লাহ আরও জানায়, তারা ফাদি-১ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে হাইফার দক্ষিণে ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ চালিয়েছে এবং তিবেরিয়াস শহরেও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী নিশ্চিত করেছে যে, তিবেরিয়াস অঞ্চলে অন্তত ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছিল, যার মধ্যে কিছু প্রতিহত করা হয়।
অন্যদিকে, হিজবুল্লাহ আরও দাবি করেছে যে তারা জাল আল-আলম সামরিক ঘাঁটিতে সাঁজোয়া যান এবং সেনাদের ওপর আক্রমণ করেছে, পাশাপাশি উত্তর ইসরায়েলের কারমিয়েল শহরেও রকেট হামলা চালিয়েছে।
আল–জাজিরা জানিয়েছে, লেবানন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে হাইফায় অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন, যদিও ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ বলেছে, মাত্র দুজন সামান্য আহত হয়েছেন এবং বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখা কাসেম ব্রিগেডস তেল আবিবে একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে, যার ফলে অন্তত দুজন আহত হয়েছেন। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়, গাজার বেসামরিক মানুষদের ওপর ইসরায়েলের হামলার প্রতিশোধ নিতেই তারা এই আক্রমণ চালিয়েছে।
ইসরায়েলের ফার ভেরাদিম শহরে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানায় একটি বাড়ি এবং কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গাজার ইসলামিক জিহাদ সীমান্তবর্তী ইসরায়েলের শহরগুলোতে রকেট হামলা চালিয়েছে, যার মধ্যে সেদরত এবং নির আম উল্লেখযোগ্য।
ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে, বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযানও চালাচ্ছে। আল-আকসা হাসপাতালে বিমান হামলা চালানোর সময় তারা দাবি করে, এটি হামাসের যুদ্ধ পরিচালনার ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল। এর আগে, সাহদা আল-আকসা মসজিদে হামলায় অন্তত ২১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন।
গাজার খান ইউনিসসহ অন্যান্য এলাকাতেও বিমান এবং স্থল হামলা অব্যাহত রয়েছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় অন্তত ৩৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত ৪১ হাজার ৯০৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৯৭ হাজারেরও বেশি আহত হয়েছেন।
লেবাননেও ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। বৈরুতসহ দক্ষিণ উপকণ্ঠে একাধিক বিমান হামলার ঘটনা ঘটেছে। ইসরায়েলের সঙ্গে লেবাননের দক্ষিণ সীমান্তে হিজবুল্লাহ যোদ্ধাদের লড়াই চলছে। ইসরায়েল আরও সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছে।